করোনাকালীন সময়কে কাজে লাগিয়ে বিস্ময়কর প্লেন আবিষ্কার করে এলাকাবাসীর প্রশাংসায় ভাসছে মোঃ বোরহান মোড়ল। করোনার সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ থাকায় ইউটিউবে প্লেন তৈরীর ভিডিও দেখে প্লেন তৈরীর প্রতি উদ্বুদ্ধ হয় বোরহান।এরপর অনলাইনে প্লেন তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম অর্ডার করে সে। দশবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এগারো বারে সফলতার দেখা পায় বোরহান।
এ সময়ে তার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বোরহানের বাবা-মা তার এই বিস্ময়কর কাজ দেখে আর্থিক ও মানসিকভাবে সহযোগিতা করেছে। ছেলের এমন সাফল্য দেখে গর্ববোধ করছে বোরহানের বাবা-মা।এদিকে, প্লেনটি উড়ার সময়ে শত শত মানুষের উপচে পড়া ভিড় সৃষ্টি হয়। উৎসুক জনতা বোরহানের কাজকে প্রশাংসা করার পাশাপাশি পরবর্তীতে এমন কাজের মাধ্যমে উন্নয়নমুখী পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা করছে।
বোরহান উদ্দীন সাতক্ষীরা জেলার তালা সদরের আলাদিপুর গ্রামের আতিয়ার মোড়লের ছেলে। চলতি বছর তালা বিদে সরকারি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।বোরহানের মা বিউটি বেগম জানান, প্রথমদিকে ছেলের এ সকল কার্যক্রম দেখে বিরক্তি বোধ করলেও পরবর্তীতে সেটার সফলতা দেখে বেশ আনন্দিত হয়েছে। পেলেন তৈরীর প্রতি তার ছেলের এত বেশি আগ্রহ দেখে আর্থিক ও মানসিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। এখন প্রতিদিনই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন আসে বোরহানের তৈরিকৃত প্লেনটি দেখতে। মা হয়ে আমি গর্ববোধ করছি। তার এই মেধাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে আরো নিত্য নতুন আবিষ্কার করতে পারবে।
বোরহানের বাবা আতিয়ার মোড়ল জানান, বোরহান এই পর্যন্ত দশটি পেলেন তৈরি করেছে কিন্তু সেগুলো একবারও আকাশে উড়তে পারেনি। ১১ বারে সফলতা পেয়েছে বোরহান, এখন তার প্লেনটি আকাশে উঠছে। বিভিন্ন এলাকার লোকজন এটা দেখতে আসে। তার এমন ভিন্নধর্মী কর্মকাণ্ড সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তার মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে পরবর্তীতে আরো নিত্য নতুন আবিষ্কার করতে পারবে।
স্থানীয় আব্দুল মান্নান জানান, বোরহান আমাদের এলাকার ছেলে সে মেধা খাটিয়ে যে প্লেনটি তৈরি করেছে সেটি আমরা ফ্লাই করা দেখলাম। দেখে অনেক ভালো লাগলো। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থা যদি বোরহানকে সহযোগিতা করে সেক্ষেত্রে নিত্যনতুন আবিষ্কার দিয়ে কৃষি সহ অন্যান্য খাতে বিভিন্ন সহযোগিতা করতে পারবে সে।
বোরহান মোড়ল জানান, করোনা কালীন সময়ে অবসরে থাকায় সে সুযোগে ইউটিউবে হঠাৎ একদিন দেখতে পাই অনেকে প্লেন তৈরি করছে। বিষয়টি দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হয়। পরবর্তীতে অনলাইনের বিভিন্ন সাইটে গিয়ে প্লেন তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম অর্ডার করি। ককসিট, মটর সহ অন্যান্য সরঞ্জামের সমন্বয়ে একটি প্লেন তৈরি করতে হয়। দশবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি দশটা প্লেনের সরঞ্জাম নষ্ট হয়েছে এতে সব মিলিয়ে ৫০ হাজার টাকা মত আমার ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ প্লেন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি এবং সেটা এখন সফলভাবে আকাশে ফ্লাই করেছে। পরবর্তীতে পরিকল্পনা রয়েছে ভিন্নধর্মী আরো কিছু করার।
তিনি আরও জানান, এই প্লেলকে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহার করে কৃষকরা বেশি উপকৃত হবে। কৃষিক্ষেতে কিটনাশক স্প্রে করা সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বেশ ভূমিকা রাখবে এই প্লেনটি। সে ক্ষেত্রে সরকারি কোন সহায়তা পেলে কাজগুলো আরও সফলভাবে করা সম্ভব হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, চলতি মাসের ৯ তারিখে তালা উপজেলায় ডিজিটাল মেলা হবে সেখানে বোরহান অংশগ্রহণ করলে তাকে যাচাই-বাছাই পর্যবেক্ষণ করে একটি রিপোর্ট সরকারের কাছে পাঠানো হবে। সরকার যদি সেটার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সেক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করা হবে।